
নিউজ ডেস্ক: ফেসবুকে প্রতারণার মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে আলামিন নামে এক যুবককে আটক করেছে র্যাব। রোববার র্যাব-১০ এর সিপিসি-১ এর একটি দল রাজধানীর হাজারীবাগ থানাধীন রায়ের বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
র্যাব সদর দফতরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সোমবার জানান, মাহবুব সালাম ফাহিম নামে এক যুবক দীর্ঘদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে প্রথমে প্রেম করে। এরপর বিয়ের প্রলোভন ও ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন তরুণীদের কাছ থেকে ধারাবাহিকভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল।
তার এ রকম অপকর্মের শিকার ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এক তরুণীর লিখিত অভিযোগ দীর্ঘ এক মাসের অধিক তদন্ত ও তথ্য সংগ্রহ করে বিশেষ অভিযান চালানো হয়।
তরুণীর বরাতে জানা যায়, চার মাস আগে ফেসবুকে ফাহিমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে প্রথমে তাদের মাঝে প্রেম ও পরে ফাহিম তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সম্পর্কের এক পর্যায়ে ফাহিম তাকে জানায়, দীর্ঘদিন সুইজারল্যান্ডে থাকায় বাংলাদেশে তার ৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে আছে, যে কারণে তার কাছে কোনো নগদ টাকা নেই। এমনকি সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত এবং চোখে জখমের উন্নত চিকিৎসার জন্য তার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ নেই।
এভাবে ছলচাতুরির মাধ্যমে প্রতারক ফাহিম ওই তরুণীর কাছ থেকে তিন ধাপে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টের (আল আমিন) মাধ্যমে প্রায় আট লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিয়ে না করা ও কথিত প্রেমিক ফাহিম তার কাছ থেকে নেয়া অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকার ও তালবাহানার এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় একটি জিডি (জিডি নং-৯৪২) করেন এবং র্যাব-১০ এ লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর তদন্তে সত্যতা পেয়ে ওই প্রতারককে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কথিত প্রতারক ফাহিম এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। তার বাবা একজন কৃষক। তার অন্য দুই ভাইয়ের একজন কৃষক ও অপরজন স্থানীয়ভাবে ওষুধের ব্যবসা করেন। প্রতারক ফাহিম (আল আমিন) ২০১৫ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৩ বছর সৌদিতে গাড়ি চালাতেন। ব্যক্তি জীবনে ফাহিম দুই বার বিয়ে করেছেন এবং বর্তমানে স্ত্রী ও সন্তানসহ রাজধানীর রায়েরবাগ এলাকায় বসবাস করেন। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।