
নিউজ ডেস্ক: দলের নেতিবাচক ভাবমূর্তি আড়াল করতে নতুন নামে আত্মপ্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামী। অতীতে কয়েক দফায় সংস্কারের আলোচনা হলেও প্রথমবারের মতো জামায়াতে ইসলামীকে নতুন অবয়বে আনার প্রস্তাব করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যরা। যদিও জামায়াতের এমন সিদ্ধান্তে দলটির কর্মকৌশল নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, জামায়াতে ইসলামী নতুন নামে মাঠে আসলেও তাদের বোতলে পুরনো বিষই থাকবে। ফলে দেশে আবারও সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হতে পারে।
জানা গেছে, দলের বর্তমান সংগঠন ও কাঠামো ঠিক রেখে নতুন নামে নতুন সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পুরো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদকে। এই সংগঠনের নাম, কাঠামো, ধরন নিয়ে এ কমিটি কাজ শুরু করেছে। ১২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোকপাত হয়েছে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার কয়েকজন সদস্য জানান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে রাজনৈতিক অবস্থান, উপমহাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর আচরণ এবং সর্বশেষ বিগত ১০-১২ বছর ধরে রাজনৈতিক যে বাস্তবতার মধ্য দিয়ে জামায়াতকে যেতে হয়েছে, সেসব দিক বিবেচনা করে ‘জামায়াত’হিসেবে রাজনৈতিক সাফল্য অনেকটাই সুদূরপরাহত। এক্ষেত্রে গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে কেন্দ্রীয় শূরা সদস্যদের পৃথক-পৃথক বৈঠক থেকে প্রস্তাব আসে, দলের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে। এ বিষয়ে দলের নির্বাহী কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
গত কয়েক বছরে জামায়াত নতুন নামে আসার বিষয়টি আলোচনায় আশে। প্রথমবার আলোচনা হয় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানের একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে। ২০১০ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ৭ নম্বর সেল ‘বকুল’ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি জামায়াতের নাম পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন ও নতুন নামে আত্মপ্রকাশ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক এ আরাফাত রহমান বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের যেসব রাঘব বোয়ালরা স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল তাদের মতাদর্শকেই এখনো ধারণ করে দলের নেতারা। ফলে নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করে সেই ধারণাকেই প্রতিষ্ঠিত করতে চাইবে তারা। জামায়াতের আদর্শকে পরিহার করতে পারবে না তারা। ফলে নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করে রাজনীতি করার সুযোগ পেলে পুনরায় তারা তাদের পূর্বাবস্থায়ে ফিরে আসবে না সেই নিশ্চয়তা কে দিতে পারে? সুতরাং বিষয়টি মোটেই শুভকর নয়।