
নিউজ ডেস্ক: ঈদ যায় ঈদ আসে, পকেটেই থাকে বিএনপির আন্দোলন। কেবল তাদের দেখা মেলে প্রেসব্রিফিং আর নালিশের টেবিলে। নেই কোন সাংগঠনিক তৎপরতা, নেই দল গোছানোর চেষ্টা। কেন্দ্রীয়সহ তৃণমূলের একটা বড় অংশই এখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ‘নিজেদের চরকায়’ তেল দিতে। পরিবার-স্বজন আর কর্মে কাটছে তাদের সময়। এখন তাহলে প্রশ্ন, দল চালাচ্ছেন কে? আর কে-ই বা নাড়ছেন কলকাঠি?
দায়িত্বশীল সূত্রের তথ্যমতে, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে এখন সন্দেহ-অবিশ্বাস চরমে। দলের বড় একটি অংশকেই নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। গুটি কয়েকজন নেতাই দল চালাচ্ছেন। কমিটি গঠন বা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত নেন দু-চারজনই। এ ক্ষেত্রে স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে বিএনপির নির্বাহী কমিটি অনেকটাই অকার্যকর। আর সবকিছুর জন্য অদ্বিতীয়ভাবে দায়ী লন্ডনে পলাতক ফেরারি আসামি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ‘রিজভী নির্ভর’ হয়ে নিজের সিদ্ধান্ত স্বৈরতান্ত্রিক উপায়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন দলের উপর। তাই অধিকাংশরাই নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। কেউবা করেছেন দলত্যাগও।
সুযোগটা মোটেই হাত ছাড়া করছেন না দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও তারেকের ‘ডান হাত’ খ্যাত নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি সুকৌশলে সবাইকে চুপ রেখে তারেকের ‘দৃশ্যমান অবর্তমানে’ সবার উপরে নেতৃত্বের ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। করছেন বাহাদুরি।
বাংলা নিউজ ব্যাংকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, দলের তৃণমূলেও একই হাল। কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়হীনতা ও বিরোধে অধিকাংশরাই রাজনীতির মাঠ ছেড়ে মন দিয়েছেন ধর্মে-কর্মে। তাই দলীয় ‘নাম সর্বস্ব’ কর্মসূচিতেও দেখা মেলেনা তাদের। কালেভদ্রে দেখা মিললেও নেতাকর্মীরা মেতে থাকেন খোশগল্প কিংবা সেলফি তোলায়। কেন্দ্র-তৃণমূল সবমিলিয়ে তাই এখন কেবল নিষ্ক্রিয়তার অভিন্ন সুর আর রিজভীদের দাপটের অখণ্ড চিত্র।
এমতাবস্থায় দলের একটি বিদ্রোহী অংশের দাবি, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বড় একটি অংশই তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে যোগসাজশ করছে। এ কারণে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না বিএনপি। ফলে মুখ থুবড়ে পড়েছে দলের রাজনীতি। দলের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে সুবিধাবাদী ও নিজের আখের গোছানো রিজভীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সহাস্যে। তাদেরকে প্রতিরোধ করার সাধ্য কারো নেই। আর কে-ই বা রুখবে, তারা তো খোদ তারেক রহমানের ইশারাতেই চলছেন।
এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি অনেক আগেই রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছে। সক্রিয় হওয়ার বিপরীতে হয়েছে নিষ্ক্রিয়। আর সুযোগসন্ধানীরা সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে বরাবরই নেড়েছেন কলকাঠি। যে ধারা আজও অব্যাহত। এই গণ্ডি, এই চর্চা থেকে কখনোই বের হতে পারবে না বিএনপি। এভাবেই একটা সময়ে কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে রাজনৈতিক দলটি।