
নিউজ ডেস্ক: দলীয় ক্ষমতা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের হাতে চলে যাওয়ায় বুদ্ধিজীবীদের কদর কমেছে দলটিতে। এ পরিস্থিতিতে সঠিক দিক-নির্দেশনার অভাবে দিন দিন তলানির দিকে যাচ্ছে দলের অবস্থান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন না। তাই তিনি সর্বদা রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ গ্রহণ করতেন। কিন্তু বিএনপিতে তার নিষ্ক্রিয়তার কারণে বিপাকে পড়েছেন তার রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীরা।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, অবহেলা, অবমূল্যায়ন আর পরামর্শ না শোনায় বিএনপি থেকে দিন দিন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তারা। ফলে বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধি নয়, তারেকের একক সিদ্ধান্তেই চলছে বিএনপির সব কার্যক্রম।
দলীয় সূত্র জানায়, মূলত খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পরই দলের ক্ষমতা চলে যায় তারেক রহমানের হাতে। তখন থেকেই বিএনপিতে মূল্যায়ন কমতে থাকে বুদ্ধিজীবীদের। তার কারণ হলো- বিএনপিতে তারেক অনুসারীরা মনে করেন, এসব বুদ্ধিজীবীরা খালেদাপন্থী। তারা সব সময় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তাই বর্তমানে বিএনপিতে এখন আর তাদের প্রয়োজন নেই। আর তারেক রহমানও ব্যক্তিগতভাবে চান না তারা দলের মধ্যে কোনোভাবে নাক গলাক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বলেন, যেদিন থেকে খালেদা জিয়া কারাগারে সেদিন থেকেই তারেক রহমান তার মতো করে দল গোছাতে শুরু করেছেন। তিনি কারো পরামর্শ শুনতে রাজি নন। নিজে যেটা ভালো মনে করেন, সেটাই করেন। ফলে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরাও দিনদিন নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। কেননা তারা তো তারেক রহমানকে কোনো পরামর্শ দেবেন না। তারা খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন।
তিনি বলেন, যেসব বুদ্ধিজীবী সব সময় তারেকের বিরুদ্ধে কথা বলতেন, সেই তারেক এখন দলের মূল নেতৃত্বে। এমন পরিস্থিতিতে তারা কীভাবে বিএনপির বুদ্ধিজীবী হিসেবে কাজ করবেন?
এ বিষয়ে একাধিক বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, বিএনপিতে আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। আর আমরা নিজেরাও অপাত্রে কোনো পরামর্শ দিতে চাই না।
তারা বলেন, আমরা যারা বিএনপিতে বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত। তারা সবাই বিভিন্ন প্রয়োজনে খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়ে আসতাম। কিন্তু সেই খালেদাই এখন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। তাহলে বুদ্ধি দেব কাকে?
জানা গেছে, বিএনপিতে বুদ্ধিজীবী হিসেবে কাজ করতেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ড. শফিক রেহমান, কলামিস্ট ফরহাদ মজহার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ইউসুফ হায়দার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান, কবি আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ। তারা সবাই আজ নিষ্ক্রিয়দের তালিকায়।