
বিএনপি-জামায়াতের ছায়াতলে থেকে মোদি বিরোধী আন্দোলনের নামে শুক্রবার (২৬ মার্চ) রাজধানীসহ চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে নৃশংস তাণ্ডব চালিয়েছে হেফাজত ইসলাম। তাদের সহিংসতায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তবে তাদের এই সহিংস হামলাকালে অধিকাংশের মুখেই ছিলো না মাস্ক। কেউই মানেননি ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি। বরং ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে করেছেন আন্দোলন। এর ফলে করোনা সংক্রমণ আবারও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে মহামারিতে রূপ নিতে পারে বলে মন্তব্য, দেশের বিশিষ্টজনদের।
নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যমতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ২৬ মার্চ বাংলাদেশে এসেছেন বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার সফরসূচি ঘোষণার পর থেকেই গাত্রদাহ শুরু হয়েছে স্বাধীনতাবিরোধী একটি কুচক্রী মহলের। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ঢাকাস্থ পাকিস্তান দূতাবাস মোদি বিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। যাতে ‘পেইড এজেন্ট’ হয়ে জলঘোলা করার অপচেষ্টা করছে হেফাজত ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর গং।
কিন্তু বিস্ময়কর তথ্য হলো তারা মোদি বিরোধী এই আন্দোলনের নামে যখনই মিছিল-সমাবেশে একত্রিত হচ্ছেন, তখন কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। পরছেন না মুখে মাস্কও। উপরন্তু গাঁ ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে, হাতে হাত রেখে দিচ্ছেন মোদি বিরোধী স্লোগান।
বাংলা নিউজ ব্যাংকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে আসছেন- এমন খবর শোনার পর থেকেই জলঘোলা করার পাঁয়তারায় লিপ্ত হেফাজত। তাদের সহযোদ্ধা হয়ে কাজ করছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর গং। লন্ডনে পলাতক ফেরারি আসামি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় এই আন্দোলনে যৌথভাবে অর্থায়ন করছে পাকিস্তান দূতাবাস ও জামায়াত। তাদের লক্ষ্য, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পাশাপাশি ভারত বিরোধিতা করা। সেই প্রেক্ষিতে তারা রাজধানীতে শুক্রবার (১৯ মার্চ) একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পরবর্তীতে মোদি বিরোধিতায় বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদ। একই ধারাবাহিকতায় মোদির আগমনের দিনেও (২৬ মার্চ) হেফাজত নেতারা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। মুহুর্তেই তাদের তাণ্ডবে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা।
শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুর থেকেও তারা পুনরায় একই স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে। ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে সমাবেশে মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুহিত খানসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত আছেন। কিন্তু আজসহ প্রতিদিনই দেখা গেছে, আন্দোলনে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীরা কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্কও পরছেন না। বরং একে-অপরের কাছাকাছি থাকছেন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের অসচেতনতায় নতুন করে আবার করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। এমতাবস্থায় আন্দোলনের নামে হেফাজতের এই কাণ্ডজ্ঞানহীনতার কোন মানে হয় না। কারণ, তারা কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এখন দেশে হু হু করে সংক্রমণের হার বাড়বে। দীর্ঘ হবে লাশের সারি। সে দায় কী হেফাজত নেবে?