নিউজ ডেস্ক: খোলস বদল করে স্বতন্ত্র হিসেবে তৈমূর আলম খন্দকারকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া, দল থেকে অব্যাহতি সহ কত কিছুই না করলো বিএনপি। কিন্তু সেই স্ট্যান্ডবাজি কোন কাজেই আসলো না। বরং তা ধরে ফেললো জনতা। নির্বাচনে জ্বালাও-পোড়াওয়ের দলকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে বুঝিয়ে দিলো তৈমূর বিএনপিরই লোক। এতে বেজায় ক্ষেপেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দাবার শেষ গুটি ব্যর্থ হওয়ায় এবার তৈমূরের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন বহিষ্কারাদেশ। ১৮ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও তারেকের ‘ডান হাত’ খ্যাত রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়া হয়। তার সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামালকেও।
নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যমতে, শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ভিন্ন পরিকল্পনা ছিলো বিএনপির। ছিলো এ এবং বি দুটো প্ল্যান। তারই অংশ হিসেবে প্রথমে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তৈমূর আলম খন্দকারকে প্রার্থী করে তারা। পরে প্ল্যান বি হিসেবে দেয় দল থেকে অব্যাহতিও। ভাবে যেহেতু বিএনপির প্রতি মানুষের অনীহা। সেহেতু তাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করিয়ে পরে আবার তাকে বিএনপিতে টেনে নেয়া হবে। কিন্তু ১৬ জানুয়ারি সেই পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দেয় সাধারণ ভোটাররা। ভরাডুবি হয় তৈমূরের। আর এই খবর লন্ডনে পৌঁছতেই বেজায় ক্ষেপে যান তারেক। রিজভীকে ফোন করে বলেন, আশার শেষ প্রদীপও নিভে গেলো। এখন আর দ্বিতীয় কোন পথ খোলা নেই। অবিলম্বে তাকে বহিষ্কার করে দাও। সঙ্গে কামালকেও। একান্ত অনুগত হিসেবে রিজভীও গুরুর আদেশ মান্য করে ১৮ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিটি নির্বাচনে তৈমূর আলম খন্দকারের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এ টি এম কামালকে বহিষ্কার করেন।
এ খবর জানার পর বাংলানিউজ ব্যাংকের এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করে তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, তারেক রহমানের এই জুলুম আল্লাহ্ও সইবে না। প্রথমে বললেন ৫ কোটি টাকা দিলে নারায়ণগঞ্জ আপনার। নির্বাচনী কাজে ব্যয় করবো, নাকি তাকে এই বিশাল অংকের টাকা দেবো, এই ভেবে তার প্রস্তাব বিনয়ের সঙ্গে নাকোচ করে দিই। এতে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে তিনি আমাকে দল থেকে অব্যাহতি দেন। বলেন, নির্বাচনে জিততে পারলে বিষয়টি তিনি বিবেচনা করবেন। কিন্তু সেটা তো আর হয়নি। যার বাস্তব প্রতিচ্ছবি এখন তো দেখতেই পাচ্ছেন, দল থেকেই বহিষ্কার। অবশ্য এটা আমার প্রাপ্য ছিলো, দীর্ঘকাল নিঃস্বার্থভাবে বিএনপির রাজনীতি করার ফল এটা। যাই হোক, তারেক রহমানকে ধন্যবাদ। সবকিছুর জন্যই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজের লাভের জন্য তারেক রহমান সব করতে পারেন, সব। যার প্রমাণ দেশবাসী ইতোপূর্বে পেয়েছেন। সঙ্গে এও দেখেছেন, প্রয়োজন শেষে ব্যবহৃত ব্যক্তিকে তিনি কোথায় নিক্ষেপ করেন। তৈমূর আলম খন্দকারের বেলাতেও সেটাই হয়েছে। এটাই তারেক তথা বিএনপির আসল চেহারা। এটাই তাদের মতাদর্শ। এ থেকেই বোঝা যায়, তারা কত হীন মানসিকতার।