নিউজ ডেস্ক : গেল কয়েক দিন থেকে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সবক’টি নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। জেলা শহরসহ উপজেলা শহরেও রাস্তাঘাট ও নিম্নাঞ্চলের বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। হঠাৎ করে পানিবন্দি হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফানাই নদীর বাঁধ ভেঙে কুলাউড়া উপজেলার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কন্টিনালা ও জুড়ী নদীরও পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। অপরদিকে পানি বাড়ছে মনু, ধলাই ও কুশিয়ারা নদীর। হাকালুকি, কাউয়াদিঘি ও হাইল হাওরও পানিতে টইটুম্বুর। এছাড়া স্থানীয় ছোট বড় খালের পানি উপচে বাড়ি ঘরে উঠছে। অতিবৃষ্টিতে জেলা শহরের অনেক নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এরপর থেকে অব্যাহত বৃষ্টির কারণে কোনো কোনো এলাকায় রাস্তা ডুবে কোমর পানির উপরে উঠেছে।
বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাবার কারণে শহরের টিভি হাসপাতাল সড়ক, ফাটাবিল, পূর্ব গীর্জাপড়া, আরামবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বেশকিছু এলাকায় পানিতে ডুবে যাওয়া রান্নার গ্যাস লাইনেও সমস্যা দেখা দেয়।
এতোকিছুর পরও এখনো ত্রাণ দিতে প্রস্তুত হয়নি বিএনপি। তারা বলছে, আপাতত ত্রাণ প্রদান শুরু না করে কোরবানির ঈদের পর সিলেটবাসীকে ত্রাণ প্রদান করা উত্তম সিদ্ধান্ত হতে পারে।
এদিকে বিএনপি ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র বলছে, দেশে বন্যা পরিস্থিতিতে দলের তরফ থেকে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষুব্ধ হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে সন্তুষ্ট করতে তাই তড়িঘড়ি করে বিএনপির সহায়তা কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদিও ঈদ উদযাপনের কথা মাথায় রেখে বিএনপির বিত্তশালী কোন নেতাই বন্যা তহবিলে আর্থিক সহায়তা দিতে রাজি হচ্ছেন না। অনেক চাপাচাপির পর দলের বিত্তশালী নেতারা ঈদের পর আর্থিক অনুদান দিতে রাজি হয়েছেন। যার কারণে ঈদের আগে বন্যাকবলিত মানুষদের কোন ধরনের সহায়তা দিতে পারছে না বিএনপি। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের সহায়তার পরিকল্পনাটি তাই আপাতত কাগজেই সীমাবদ্ধ থাকছে। আর কমিটি করে সেই কাজের পেপারওয়ার্কও করে নিলো বিএনপি। তবে দুদিন আগে কমিটি গঠন করেও সহায়তা দিতে না পারায় দলের অভ্যন্তরে চলছে নানা সমালোচনা।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল মানুষকে দলীয় সহায়তা দিতে চায় বিএনপি। যার কারণে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে ঈদের আগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদেরকে সহায়তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ঈদ পার হলেই দেশব্যাপী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। সেজন্য অবশ্য মির্জা আব্বাস, জমির উদ্দিন সরকার, আব্দুল আউয়াল মিন্টুদের মতো বিত্তশালী নেতাদের অনুদান দিয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তারা এখনো কোন উত্তর দেননি। তাই বিএনপির সহায়তা পেতে হলে দুর্দশাগ্রস্তদের ঈদ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।