নিউজ ডেস্ক : শুরু থেকেই পদ্মা সেতুকে ঘিরে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র করে আসছে বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের জোটসঙ্গীরা। কাজ শুরু হওয়ার আগেই বিশ্ব ব্যাংককে দিয়ে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল তারা। সে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয় কানাডার আদালতে। আন্তর্জাতিক আদালত বলেছিল- দুর্নীতির যে অভিযোগ বিশ্বব্যাংক করেছিল সেটি মিথ্যা, একেবারে গার্বেজ। পরে নির্মাণের পুরোটা সময় জুড়েই কমতি ছিল না গুজব আর অপপ্রচারের। দেশবিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত গুজব ছড়ায় ‘সেতুতে মাথা লাগবে’। ছেলেধরার গুজবে সারা দেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। প্রাণ হারান পাঁচজন। এরপরও থেমে থাকেনি বিরোধী শিবির।
সকল ষড়যন্ত্র, গুজবে ব্যর্থ হয়ে দেশে ১৮ কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগ মুহূর্তেও দেশবিরোধী শিবির চালাচ্ছে অপপ্রচার। এবার চীন-ভারতের সঙ্গে তুলনা করে পদ্মা সেতুর খরচ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে এই কুচক্রী মহল। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিএনপির নেতারা প্রচার করছে- ২০০৭ সালে প্রাথমিক যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল তখন তার বাজেট ছিল ১০ হাজার কোটি টাকা, এখন এই বাজেট হয়ে গেছে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
আরো একধাপ বাড়িয়ে লন্ডনে পলাতক তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলছে, ৫০ হাজার কোটি টাকা। যা নির্লজ্জ মিথ্যাচার। সত্যিকার অর্থে পদ্মা সেতুর মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।
বিজ্ঞজনরা বলছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি খরচ হয়েছে এটা সত্য। তবে বিএনপি নেতারা যে টাকার অংক বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই সেতুতে বেশি খরচের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
গোটা পৃথিবীতে অ্যামাজানের পরে সবচাইতে খরস্রোতা নদী পদ্মা। দ্বিতীয় আর কোনো নদী নেই। ফলে নদী শাসনের জন্য ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। ১৬ কিমি পাড় ধরে নদী শাসন করতে হয়েছে। ৫.৮ কিলোমিটার সেতু ৬.১৫ কিলোমিটার হয়েছে। ২ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করার কথা ছিল করা হয়েছে ৬ হাজারের বেশি। যে ক্ষতিপূরণ জনগণকে দেয়ার কথা তার ৩ গুণ বেশি দেয়া হয়েছে। ৩টি মাত্র পিলারের মাধ্যমে যে উচ্চতার কথা ছিল ৪১টি স্প্যানই সেই উচ্চতায় বসানো হয়েছে। ১৬ কিমি নদী শাসন করতে হয়েছে পদ্মার দুই পাড়ে। পৃথিবীতে কোনো সেতুর ক্ষেত্রে এটি করা হয়নি। শুধু তাই নয় পদ্মা সেতুর পাইল লোড ক্যাপাসিটি আর পিলারের ওজন ভূপেন হাজারিকা সেতু থেকে ১৩৩ গুণ ভারি।
বিএনপি নেতারা দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ না দিতে পেরে ১০ হাজার কোটি টাকার সেতু ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কেন পদ্মা সেতুতে নদী শাসন প্রয়োজন হয়েছে, তারা তা জানে না। পদ্মা সেতুর মূল সেতুর খরচ ৩০ হাজার কোটি টাকা নয়, মূল সেতুর খরচ ১২ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা, সেটা তারা বলছে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী ২৫ জুন চালু হচ্ছে দেশের ১৮ কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের এই সেতু দেশের অর্থনীতিতে যুগান্তকারী প্রভাব ফেলবে স্বাভাবিকভাবেই। শুরু থেকেই এই পদ্মা সেতু নিয়ে জল কম ঘোল করেনি বিরোধীপক্ষ। ষড়যন্ত্র এখনো চলমান। উন্নয়নের একটি স্তম্ভকে সাধুবাদ না জানিয়ে যারা স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু নিয়ে মিথ্যাচার করছে তাদের বয়কটের সময় এসে গিয়েছে।