
নিউজ ডেস্ক : ইরাক-সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) -এর সঙ্গে পুরনো বন্ধুত্ব বিএনপি-জামায়াত জোটের। তাদের মদদে ২০০৫ সালে ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। দেশের ৩০০টি স্থানে মাত্র আধাঘণ্টার ব্যবধানে একযোগে ৫০০ বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এই জঙ্গিরা। এই বিএনপি-জামায়াত জোটের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০১৬ সালের ১ জুলাই ভয়াবহ হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা চালানো হয়।
রাজধানীর কূটনৈতিক পাড়া খ্যাত গুলশান লেক পাড়ের হলি আর্টিজান বেকারি সবসময়ই মুখর থাকতো দেশি-বিদেশিদের পদচারণায়। রোজার ঈদের এক সপ্তাহ আগে পাঁচ তরুণ জঙ্গি পিস্তল, সাব মেশিনগান আর ধারালো অস্ত্র হাতে ঢুকে পড়েছিল সেই ক্যাফেতে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনাটি ঘটেছিল সে রাতে। জঙ্গিরা জবাই ও গুলি চালিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
ভয়ঙ্কর সেই রাতের শেষে কমান্ডো অভিযানে জঙ্গিদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে হলি আর্টিজান সংকটের অবসান হয়। কিন্তু দেশের মানুষের হৃদয়ে থেকে যায় গভীর ক্ষতচিহ্ন। অনুসন্ধানে জানা যায়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি জঙ্গিদের দিয়ে এই হামলার পরিকল্পনা করে।
বিএনপির সাথে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সংযোগ আর বাংলাদেশে জঙ্গি উত্থান একই সূত্রে গাঁথা। রাজনৈতিক বিজ্ঞজনরা বলছেন, বাংলাদেশের উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও তার গর্ভে জন্ম নেওয়া জঙ্গি তৎপরতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বারবার সামনে চলে আসে পাকিস্তান, জামায়াত, শিবির ও বিএনপির নাম। স্বাধীন বাংলাদেশে জেনারেল জিয়া ও বঙ্গবন্ধুর অন্যান্য খুনিরা উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির যে বীষবৃক্ষ রোপণ করেছিলেন আর জামায়াতের পরিচর্যায় খালেদা-তারেক জঙ্গিবাদের মতো ভয়াবহ দানবকে আশ্রয় দিয়ে- অক্সিজেন দিয়ে শক্তিশালী করে তুলেছিলেন।
আর গুলশানে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর খালেদা জিয়া প্রথমে এক বিবৃতিতে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘রক্তাক্ত অভ্যুত্থান’ বলেছিলেন। সরকার যখন জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে তখন প্রায়াত হান্নান শাহ-সহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানকে সাজানো, বানোয়াট দাবি করেছিল। যা ছিল আরও ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত। তাদের এই দাবির অর্থ ছিল- জঙ্গিদের পক্ষাবলম্বন করা এবং পরোক্ষভাবে জঙ্গিদের সাহস জোগানোর অপচেষ্টা করা।
দেশের রাজনৈতিক বিজ্ঞজনরা বলছেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াতের হাত ধরেই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল। ক্ষমতায় থাকাকালীন খালেদা-তারেকসহ জেএমবির ধ্বংসাত্মক ও দেশবিরোধী কার্যকলাপে মদদ দিয়েছিল তাদের মন্ত্রী-এমপিরা। বিএনপি নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী দুলুর সাথে গভীর সম্পর্ক ছিল জেএমবির জঙ্গিদের। শায়খ রহমান ও বাংলা ভাই দলবল নিয়ে নাটোরে দুলুর বাসভবনে বেঠক করতেন। বাংলা ভাইসহ অন্যান্য জঙ্গিদের নিয়মিত আর্থিক সহায়তাও দিতেন দুলুসহ দলটির নেতারা। কিন্তু সে সবই আজ অতীত। সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে জঙ্গিবাদের সেই ভয়াল রাস্তা ছেড়ে আজ উন্নয়নের রাস্তায় বাংলাদেশ।