
নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির জনসভা, মিছিল-পিকেটিংয়ে লোক সাপ্লাই দিয়ে কোটিপতি বনে গেছেন বস্তির রানী রহিমা। এছাড়াও দলটির নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় করতেন মাদক ব্যবসা। সঙ্গী ছিলেন স্বামী হযরত আলী। ২০১৯ সালে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হবার পর একাই সব সামলাম রহিমা।
গত চার মাস আগে রহিমা বেগমের ব্যাংক হিসাবে ১২ কোটি টাকা জমা থাকার তথ্য পেয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এর বাইরে রহিমার স্বামী ও তার স্বজনদের ব্যাংক হিসাবে মিলেছে আরও ৯ কোটি টাকা।
জানা যায়, রহিমা বেগম খুনের মামলার অভিযুক্ত আসামি। জামিন নিয়ে ৫ বছর ধরে গা ঢাকা দিয়ে আছেন তিনি। আজ এখানে, কাল ওখানে- এভাবেই পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আছেন তিনি। তার নামে ঢাকায় মাদকের এক ডজনের বেশি মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। রহিমার নামে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাহমুদনগরে ৭ তলা বাড়ি রয়েছে। এছাড়া ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে আরও কয়েক কাঠা জমির খোঁজ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রহিমার বিরুদ্ধে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওয়ারী থানায় অর্থ পাচার আইনে মামলা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের করা মামলার তথ্যানুযায়ী, রহিমা বেগমের ৩টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। ১৪ বছর আগে (২০০৮ সাল) দুটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। আরেকটি হিসাব খোলা হয় ২০১৭ সালে। এই ৩টি ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা হয় ১২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এছাড়া রহিমার স্বামী হযরত আলীর নামে দুটি ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। ১০ বছর আগে একটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। অন্যটি খোলা হয় ৪ বছর আগে। এই ৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এবং রহিমা–হযরত আলী দম্পতির দুই ছেলের ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ৭ লাখ টাকা জমার তথ্য মিলেছে।
জানা যায়, বিএনপির মিছিলে, জনসভায় লোক সাপ্লাইয়ের কাজ এবং মাদক ব্যবসা করে তারা এই সম্পদের মালিক হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের বাড়িটি রহিমার নামে। সবুজবাগের মেরাদিয়া মৌজায় রহিমার সাড়ে ৩ কাঠা জমি রয়েছে। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জে রহিমার নামে আরও জমি রয়েছে।
রহিমার বিরুদ্ধে গেন্ডারিয়া থানায় ৮টি মাদকের মামলা, যাত্রাবাড়ী থানায় ৩টি এবং রামপুরা থানায় ১টি মাদকের মামলা রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে তার বিরুদ্ধে এই মামলা করে পুলিশ। প্রতিটি মামলায় রহিমাকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। মামলাগুলো ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া রহিমার স্বামী হযরত আলীর বিরুদ্ধে গেন্ডারিয়া থানায় ৬টি ও যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর ও ডেমরা থানায় ১টি করে মাদকের মামলা রয়েছে।
এছাড়া রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ২০১৪ সালের ৮ই নভেম্বর আসলাম শিকদার নামের এক ব্যক্তিকে খুনের দায়ে রহিমাকে প্রধান আসামি করে ঢাকার আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসলাম শিকদার খুনের মামলায় ২০২০ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি রহিমাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রহিমা গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। তবে ২০২১ সাল থেকে তিনি পলাতক। রহিমার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।