নিউজ ডেস্ক : জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ছাত্রদের হাতে অস্ত্র আর মাদক তুলে দিয়ে দেশের ছাত্র সমাজকে কলুষিত করেছে। এখন তার দলের নেতারাই জাতির বিবেক শিক্ষকদের পেটাচ্ছেন, করছেন লাঞ্ছিত।
কুড়িগ্রামে এক শিক্ষককে বেধড়ক পিটিয়েছেন জেলা বিএনপির সহছাত্রবিষয়ক সম্পাদক মো. মাসুদ রানা। রোববার (২২ জানুয়ারি) কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের কক্ষে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকীকে (৫৩) মারধর করেন তিনি। উদ্ধার হওয়া সিসি ক্যামেরা ফুটেজে সেই মারধরের দৃশ্য ধরা পড়েছে।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতা মাসুদ রানা তার ছেলের ভর্তি বাতিলের কারণ জানতে সাংবাদিক ও ভর্তি বাতিল হওয়া কয়েকজন অভিভাবক নিয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আরা হকের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে প্রধান শিক্ষক, আবদুল হাই সিদ্দিকীসহ অন্য শিক্ষকেরা সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী তার ভর্তি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান। এতে মাসুদ রানাসহ অন্যরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে আবদুল হাই সিদ্দিকীকে ধাক্কা দিয়ে কক্ষের এক কোনায় নিয়ে কিলঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন মাসুদ রানা। তাৎক্ষণিকভাবে অন্য শিক্ষকেরা এগিয়ে তাকে রক্ষা করেন।
শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, প্রধান শিক্ষকের কক্ষে সাংবাদিক ও কয়েকজন অভিভাবক এসে উচ্চবাচ্য করছেন—এ কথা পিয়নের মুখে শুনে তিনি প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যান। সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী, ছেলের ভর্তি বাতিলের বিষয়টি জেনে বিএনপি নেতা মাসুদ রানা ও তার সঙ্গীরা শিক্ষকদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে মাসুদ রানা তাঁকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে কক্ষের একটি কোনায় নিয়ে কিলঘুষি মেরে বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু শিক্ষক পেটানো বা মারধর নয়, বিএনপি নেতারা শিক্ষকদের হত্যাও করেছে। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়ার পেটুয়া বাহিনী সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছিল। ঢাবিতে রাতের অন্ধকারে ভিসিকে সরিয়ে নতুন আরেকজনকে বসিয়ে দিয়ে ভিসির পদটাও দখল করে নেয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকসহ বহু নেতাকর্মী হত্যা করে। তাদের অত্যাচার নির্যাতনে সারা বাংলাদেশ ছিল নির্যাতিত। শুধু ক্ষমতায় থাকলেই না, ক্ষমতার বাইরে থেকেও অগ্নিসন্ত্রাসের কথা সবার জানা। ২০১৩/১৪ সালে প্রায় তিন হাজার মানুষকে দগ্ধ করে তারা। বাস, লঞ্চ, রেল কোনো কিছুই তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।
এই সন্ত্রাসী দলকে সমর্থনের আগে একবার হলেও চিন্তা করা উচিত- সত্যিই কি এরা জাতির অগ্রগতি চায়? নাকি এভাবে শিক্ষকদের পিটিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিতে চায়